সংযুক্ত আরব আমিরাতের সর্ববৃহৎ এবং সবথেকে জনবহুল একটি শহরের নাম হচ্ছে দুবাই। এ দুবাই হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী। বাংলাদেশ থেকে বহু সংখ্যক মানুষ দুবাইয়ে বসবাস করছেন। আবার ইতিমধ্যে এই দুবাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন অর্থাৎ ভিসা তৈরি করছেন। এক্ষেত্রে যারা দুবাই যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।
এই দুবাই একটি বৈশ্বিক শহর এবং মধ্য প্রাচ্যের প্রধান ব্যবসায় কেন্দ্র। জীবিকার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক মানুষ দুবাইয়ে পৌঁছাচ্ছে। সকলেই হয়তো জেনে থাকি কোনো দেশে ভ্রমণ করার পূর্বে অবশ্যই একটি ভিসার প্রয়োজন। এই ভিসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। যা ছাড়া আপনি এক দেশ থেকে অন্য কোনো দেশে কখনোই ভ্রমণ করতে পারবেন না। তবে এই ভিসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়।
দুবাই ভিসা দাম কত
এই এশীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দুবাইয়ে বসবাস করেন বাংলাদেশী (৯%)। আর প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলুন কথা না বাড়িয়ে দুবাই ভিসা দাম কত বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। যদি দুবাই যেতে চান তাহলে আপনার ভিসার খরচ হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
তবে ভিসা প্রসেসিংসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট মূল্য বাবদ সমস্ত টাকার মূল্য হবে সর্বনিম্ন ৩ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা। তবে ভিসার দাম সম্পন্ন নির্ভর করছে ভিসার ক্যাটাগরির উপর। যেমন দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ সিঙ্গেল ট্রিপ ৩০ দিনের জন্য ১৪ হাজার ৫০০ টাকা। এবং এর থেকেও কিছু পরিবর্তন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা হয়। তুমি বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ দুবাই পৌঁছাতে মোট ৫-৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়।
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে
আপনাদের দুবাই যেতে কত টাকা লাগবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার ভিসার উপর। তাই প্রত্যেকের উচিত সকল দুবাই ভিসা দাম কত জেনে রাখা। যেমন ভিজিট ভিসার খরচ সর্বনিম্ন ৩ লক্ষ টাকা হলেই চলে। আবার কিছু ক্ষেত্রে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়। যেমন কাজের ভিসা সর্বনিম্ন ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা হয়। এবং সর্বোচ্চ প্রায় ৯-১০ লক্ষ টাকা।
ভিজিট দুবাই ভিসা দাম কত
যদি দুবাই যেতে চান তাহলে কয়েকটি এয়ারলাইন্স আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইতিহাদ এয়ারলাইন্স, ফ্লাই দুবাই,আমিরাত এয়ারলাইন্স এবং এয়ার এরাবিয়া। এছাড়াও এয়ারলাইন্স অনুযায়ী এই ভিসার দাম অনেকটা পরিবর্তন হয়। তবে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই ভিসার ক্যাটাগরি। অতএব আপনি যদি ভিজিট ভিসায় দুবাই যেতে চান। তাহলে বেশিদিন দুবাই অবস্থান করতে পারবেন না। অর্থাৎ আপনার এই ভিজি দুইবার ভিসার দাম সর্বোচ্চ ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা হবে।
কাজের দুবাই ভিসা দাম কত
প্রথমত দুবাই পৌঁছাতে হলে আপনাকে কোন একটি এয়ারলাইন্স দ্বারা ভিসার প্রসেসিং সম্পন্ন করতে হবে। তবে অনেক দালাল রয়েছেন যারা এ ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করতে পরিমাণের থেকে দ্বিগুণ টাকা চেয়ে থাকেন। তবে আপনি যদি কাজের ভিসা করতে চান। অর্থাৎ ভিসার সম্পূর্ণ শেষে দুবাই যেতে চান তাহলে আপনার সর্বোচ্চ এই কাজের ভিসার জন্য খরচ হবে ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা।
দুবাই অনেক উন্নত একটি দেশ, সেখানে অল্পদিন অর্থাৎ কয়েক মাস অবস্থান করলেই আপনার যাবতীয় খরচ উঠাতে পারবেন। তবে সরকারি ভাবে যদি দুবাই পৌঁছাতে চান তাহলে আপনার খরচ হতে পারে ৩ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তবে ভিসার মূল্য কখনো নির্ধারণ করে বলা সম্ভব হয় না। সময় অনুযায়ী পরিবর্তন হয়।
হোটেল দুবাই ভিসা দাম কত
এদেশে বিভিন্ন কাজের ভিসা বাংলাদেশের ব্যক্তিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়ে থাকে। এবং হোটেল দুবাই ভিসা বাংলাদেশের অনেক চাহিদা রয়েছে। তবে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এই হোটেল ভিসায় অনেক টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। যা কয়েক মাস সেখানে অবস্থান করার পর আপনি আপনার সমস্ত খরচ উঠিয়ে নিতে পারবেন।
দুবাই ফ্রি ভিসা কত
বাংলাদেশ থেকে দুবাই ফ্রি ভিসা বলতে কিছু নেই। এখন পর্যন্ত দুবাই সরকার বাংলাদেশ থেকে দুবাই কর্মী বা যে কোন ভিসা উন্মুক্ত করে দেয়নি। তাই বাংলাদেশ থেকে দুবাই কখনই ফ্রি ভিসায় যাওয়া সম্ভব নয়। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় সরকারিভাবেই দুবাই যেতে অনেকটা কষ্টকর হয়ে থাকে।
দুবাই ভিসা করতে কি কি লাগে
প্রয়োজনে কিছু ডকুমেন্ট আপনার অবশ্যই লাগবে, যে ডকুমেন্টগুলো ছাড়া আপনি কখনোই দুবাই যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারবেন না। নিচে সেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো উল্লেখ করা হলো।
- ভিসা আবেদন ফরম।
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা থাকতে হবে।
- পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকতে হবে সর্বনিম্ন ৬ মাসের বেশি।
- ন্যাশনাল আই ডি কার্ড।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- এছাড়াও আরো প্রয়োজনীয় তথ্য।
দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি
বাংলাদেশ থেকে যে সকল মানুষ দুবাই পৌঁছে থাকেন, এর মধ্যে সব থেকে কাজের ভিসা বেশি তৈরি করা হয়। অর্থাৎ কাজের বিষয় সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রবেশ করে দুবাইয়ে। নিচে কয়েকটি ক্যাটাগরির অর্থাৎ ভিসার ধরন উল্লেখ করা হলো।
- দুবাই গৃহকর্মী ভিসা
- দুবাই গৃহপালিত ঘোড়া মুদি ভিসা
- দুবাই ব্যক্তিগত চাষ শেফিল্ড ভিসা
- দুবাই কুক ভিসা
- দুবাই নিরাপত্তা প্রহরী ভিসা
- দুবাই ভ্যালেট পার্কিং কর্মী ভিসা
- দুবাই বিশেষ নার্স কর্মী ভিসা ইত্যাদি
- দুবাই বাড়ির কৃষক ভিসা
- দুবাই ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক ভিসা
- দুবাই ব্যক্তিগত নাবিক ভিসা
তবে এর মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়, যদি তাদের নির্দিষ্ট কোন অভিজ্ঞতা থেকে থাকে। অর্থাৎ সেখানে তারা অবস্থান করে বাড়তে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এমন কোন কাজ, সেই কাজগুলো হতে পারে কৃষি, ড্রাইভিং করা, রেস্টুরেন্টের শ্রমিক,মেকানিক্যাল, ক্লিনার, ইলেকট্রিশিয়ান, কনস্ট্রাকশন শ্রমিক এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের উদ্দেশ্যে। এ সকল ভিসা এবং কাজগুলোর সব থেকে চাহিদা বেশি।
দুবাই কোম্পানি ভিসা বেতন কত
আপনার দুবাই অবস্থানরত মাসিক বেতন কত হবে। তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার দালাল এর উপর এবং আপনি কোন ভিসায় সেখানে পৌঁছেছেন। যদি কোন দালাল আপনার কাছ থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকে। তাহলে আশা করা যায় সে দালাল আপনাকে প্রতি মাসে বেতনের হিসাব বুঝিয়ে দিবে।
অর্থাৎ প্রতি মাসে আপনি ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া দুবাই ভিসা দাম কত রাখা হয়েছে আপনার কাছ থেকে তার ওপর অনেকটা নির্ভর করছে বেতনের স্কেল। তাই আমরা কখনোই দুবাই কোম্পানি ভিসা বেতন কেমন হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না।
শেষ কথা
সম্পূর্ণ চেষ্টা করেছি আমরা আপনাদেরকে সঠিক তথ্য জানিয়ে দেওয়ার। আশা করতেছি আপনারা দুবাই ভিসা দাম নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আর জেনে রাখুন, এ সকল ভিসা মূল্য, এবং দুবাই যেতে কত টাকা লাগে তার সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার এয়ারলাইন্সের টিকেটের উপর এবং ভিসার ক্যাটাগরির উপর। এছাড়াও কত টাকা পড়বে তা নির্ভর করছে দালালের টাকার চাহিদার উপর। তাই পরিচিত দালাল দিয়ে ভিসা তৈরি করুন। অতঃপর দুবাই পৌঁছে যান। আর এই পোস্ট আপনার আশেপাশে ব্যক্তিদের কে শেয়ার করে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ