জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে ২০২৪

আপনার জমি খারিজ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। তো ওই পদক্ষেপ নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব না। যেহেতু আজকের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে খারিজ করতে কত টাকা লাগে। শুধুমাত্র এই বিষয় নিয়েই ইতিমধ্যে এখানে একটি তথ্য উপস্থাপন করেছি। কাজের ধরনের পর নির্ভর করে খারিজ করতে যে পরিমাণ টাকা লাগে তা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। সাধারণভাবে হিসাব করলে খারিজ করতে প্রায় এক হাজার টাকার উপরে লেগে থাকে।

আপনার ইউনিয়নের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এলাকার সুপরিচিত নাম বেন্ডারদের দ্বারা জমি খারিজ করতে হয় বা খারিজ করে থাকে। শুধুমাত্র এক্ষেত্রে আপনাকে খারিজ বা নামজারি প্রয়োজনীয় তথ্য তাদেরকে প্রদান করতে হবে। তবে আপনি অনলাইনে নিজে নিজে করতে পারবেন। তো এই কাজটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ সকল লোকদের দ্বারাই করানো হয়ে থাকে।

তো কিভাবে খারিজ করতে হয় সেটা অনেক বিস্তারিত বিষয়, তবে এই খারিজ করতে কত টাকা লাগে শুধুমাত্র সেই টাকার পরিমাণটা এখানে উল্লেখ করেছি। অতএব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় একটু নিচে গিয়ে দেখে নিন আপনার খারিজ করতে কি পরিমান খরচ হবে।

খারিজ করতে কত টাকা লাগে

ভূমির মালিকানা হালনাগাদ, যেকোনো সময় আপনার জমি বিক্রি করা, এবং ভূমি উন্নয়ন কর আদান-প্রদান করা। এমনকি সরকারের খাস জমি সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে খারিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এমন কি আপনার জমি নিয়ে  মামলা-মুকদ্দমা সকল ঝামেলা এড়াতে খারিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপনার জমির মালিকানা এবং দখলদার প্রমাণের ক্ষেত্রে এই   খারিজ করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে আপনার জমি কি খারিজ করতে কত টাকার প্রয়োজন হবে অর্থাৎ খারিজ করতে কত টাকা লাগে। অনেকে হয়তো তাদের জমি কে খারিজ করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে খারিজের জন্য আবেদন করে থাকেন। তবে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে কত টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। তা নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। তাই সম্পূর্ণ বিস্তারিত তথ্য জানতে প্রবেশ করুন।

জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে

প্রতি বছরই জমি কেনা-বেচা হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে কোন জমির মালিকানা পরিবর্তন করতে হলে জমি খারিজ এর সর্বশেষ অর্থ বছরের করতে হবে বা করা থাকতে হবে। তবে আপনি যখন কোন জমি ক্রয় করার জন্য আপনার নিকটস্থ থানার অধীনে রেজিস্ট্রি অফিসে অথবা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। তখন জমি খারিজ করার মাধ্যমে সে জমির পুরো মালিকানাধীন আপনি হবেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে জমি খারিজ করতে মোট কত টাকা লাগে? এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ গেজেট অনুসারে একটি জমির খারিজ করতে সর্বমোট ১১৫০ টাকা লাগে। তবে কিছু আনুষঙ্গিক খরচ দিয়ে একটু বেশি হতে পারে। তবে আপনি যদি আপনার আকার মুহুরী বা দালালদের দ্বারা আপনার ভূমি অফিসে কাজ করতে যান তাহলে ৫০০০-৬০০০ টাকা আপনার কাছ থেকে হাতিয়ে নিতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জমি খারিজ করতে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে।

অনলাইনে জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে

যদি অনলাইনে মাধ্যমে আপনি নিজে নিজেই ভূমি অফিসের ওয়েবসাইটে গিয়ে জমি খারিজ করতে চান। তাহলে মাত্র ১১৫০ থেকে ৭০ টাকা খরচ হবে। এছাড়াও আরো কিছু আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তো সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ টাকার ভিতরেই আপনার জমি খারিজ হয়ে যাবে। তবে অনেক দালাল রয়েছে যারা জমি খারিজ করার দায়িত্ব নিয়ে জমি খারিজ করে দেয় না।

বরং  এর থেকে দুই থেকে তিন গুণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকে। আপনি যদি আপনার নিকটস্থ এলাকার অনুমতি বা দালালদের দ্বারা আপনার জন্য খারিজ করতে চান তাহলে আপনার ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। অনলাইনে জমি খারিজ করতে কিছু টাকা হলেই হয়। তবে এটা অবশ্যই মনে রাখবেন নামজারি এবং খারিজ করতে সমপরিমাণ টাকা লাগে।

  • কোর্ট ফি ২০
  • নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা
  • রেকর্ড সংশোধন ১০০০ টাকা
  • খতিয়ান ফি ১০০ টাকা।
  • সর্বমোট ১১৭০ টাকা।

কেন জমি খারিজ করা জরুরী

আপনি যদি কোন জমি ক্রয় করে থাকেন, তাহলে সেই প্রকৃত জমির খাজনা আপনাকে দিতে হবে। যদি জমি না করেন তাহলে পূর্বের মালিকানাধীন ব্যক্তি কে এই জমির খারিজ বা খাজনা প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রেই জমি খারিজ করা জরুরী যেন আপনি আপনার নামের জমির মালিকানা তিনি গ্রহণ করতে পারেন এবং আপনার মৌজায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।

এছাড়া সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় হচ্ছে, আপনি যদি আপনার জমি খারিজ না করেন তাহলে সেই জমি আপনি কখনো বিক্রি করতে পারবেন না। এতে করে পরবর্তীতে অনেকটা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই সময় থাকতেই অতি জরুরী হিসেবে জমি খারিজ করে ফেলুন।

জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে

খারিজ করতে সর্বমোট ২৮ থেকে ১ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। অর্থাৎ আপনার জমির নামজারি এবং খারিজ করতে ২৮ দিনে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। এই অল্প কয়েক দিনের ভিতরেই আপনার জমি খারিজ হয়ে যাবে।

জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে

সংক্ষিপ্ত পরিসরে নিচে জমি খরচ করতে কি কি কাগজপত্র লাগে তা নিচে উল্লেখ করেছি। আশা করছি নিচের তথ্যটি আপনাদের অনেক কিছু উপকারে আসবে। যারা জমি ক্রয় করছেন এবং খারিজ করতে চাচ্ছেন তারা নিচে দেওয়া তথ্য গুলো সংগ্রহ করুন এবং আপনার নিকটস্থ ভূমি অফিসে গিয়ে জমি খারিজ করুন। জমি খারিজ করতে যেসব কাগজ লাগে তা হচ্ছে:

  • ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি লাগবে।
  • ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে।
  • সংশ্লিষ্ট জমির এস এ খতিয়ানের ফটোকপি লাগবে।
  • বায়া দলিলের ফটোকপি (প্রয়োজন হলে)
  • আর এস খতিয়ানের ফটোকপি
  • জমির দলিলের ফটোকপি
  • ওয়ারিশান সনদ ( প্রয়োজন হলে)
  • ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলার কপি

জমি খারিজ না করলে কি হয়

কোন জমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে দলিল রেজিস্ট্রি করে নেওয়া। তারপর এই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি হচ্ছে খারিজ করা। খারিজ না করলে আপনি এই জমি কখনোই পরবর্তীতে ক্রয় এবং বিক্রয় করতে পারবেন না। এবং যেকোনো সময় পূর্বের মালিক আপনার জমি দখলদার হিসেবে দাবী করতে পারে।

অর্থাৎ জমির নামজারি বা খারিজ করা না থাকলে আপনি সেই জমির মালিকানা দাবি করতে পারবেন না। এবং পূর্বের মালিক অন্য কোথাও সেই জমি বিক্রি করে দিতে পারে আপনার কোন রুপ জিজ্ঞেস ছাড়াই। এমনকি পরবর্তীতে আপনাকে এ জমি নিয়ে বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দামায় পড়তে হতে পারে। তাই জমির ক্রয় করার পরেই অবশ্যই তাড়াতাড়ি জমি খারিজ করে ফেলুন। 

শেষ কথা

জমি ক্রয় করার পর খারিজ করতে কত টাকা লাগে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন তথ্য আপনাদের জন্য উল্লেখ করেছি। ইতিমধ্যে হয়তো আপনারা আমার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে নিয়েছেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকে আপনারা আপনাদের অনুসন্ধান করা তথ্য জানতে পেরেছেন। যদি এই পোস্ট থেকে আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার আশেপাশের ব্যক্তিদেরকে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ

About Foysal Ahmed

আমি মোঃ ফয়সাল আহমেদ। দীর্ঘদিন যাবত আমি অনলাইন কাজের সাথে জড়িত। আজকের দাম কত সাইটে আমি আমাদের দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পণ্যের দাম নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি আমাদের সাইট থেকে প্রায় সকল ধরনের জিনিসের দাম সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।

View all posts by Foysal Ahmed →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *