
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (BPC) ঘোষণা দিয়েছে যে ৫ জুলাই থেকে এভিয়েশন ফুয়েল A-1 এর দাম Tk ১৭.৪৩ কমানো হয়েছে। এই দাম কমানোর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে জেট ফুয়েলের মূল্য কমে যাওয়া। এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে গড় আমদানির খরচ আগের চেয়ে অনেকটা কমে যায়, তাই সরকারের পক্ষে স্থানীয় বাজারে দাম কমানো যৌক্তিক হয়ে দাঁড়ায়।
এখন প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম Tk ৯৪.৫৭, যা আগের তুলনায় অনেক কম। এই সিদ্ধান্ত মাসিক ফুয়েল মূল্য সমন্বয়ের আওতায় নেওয়া হয়েছে, যা ২০২২ সাল থেকে চালু আছে।
এয়ারলাইন্সগুলোর স্বস্তি (Airlines Er Jonno Shanti)
This Article Includes
- 1 এয়ারলাইন্সগুলোর স্বস্তি (Airlines Er Jonno Shanti)
- 2 যাত্রীদের উপকার কীভাবে হতে পারে? (Passenger Benefit Ki Hote Pare?)
- 3 সরকারের মূল্য নির্ধারণ কৌশল (Govt. Fuel Pricing Strategy)
- 4 টিকিটের দাম কমবে? (Will Ticket Prices Come Down?)
- 5 গাড়ির পেট্রোল বা ডিজেল দাম কি কমবে? (Petrol/Diesel Price Kombe?)
- 6 এয়ারলাইন্সদের প্রতিক্রিয়া (Airlines Er Reaction)
- 7 উপসংহার (Conclusion)
জেট ফুয়েল সাধারণত একটি এয়ারলাইনের মোট খরচের প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে, এই দাম কমে যাওয়ায় স্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলো যেমন বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার অনেকটাই উপকৃত হবে।
একজন ইউএস-বাংলা কর্মকর্তা বলেন, “জেট ফুয়েলের খরচ কমলে আমাদের ফ্লাইট পরিচালন ব্যয় অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়। এটা যদি স্থায়ী হয়, তাহলে আমরা যাত্রীদের জন্য অফার বা ডিসকাউন্ট দেওয়ার কথা ভাবতে পারি।”
তবে স্বস্তির খবর পেলেও, তারা এখনই টিকিটের দাম কমাবে কি না, তা স্পষ্ট করে জানায়নি।
যাত্রীদের উপকার কীভাবে হতে পারে? (Passenger Benefit Ki Hote Pare?)
যদিও এই দাম কমানো সরাসরি সাধারণ যাত্রীদের জন্য নয়, তবুও এর প্রভাব তারা ভবিষ্যতে অনুভব করতে পারেন। যদি এয়ারলাইন্সগুলোর খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায় এবং তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে চায়, তাহলে অফার, ডিসকাউন্ট বা কম দামের টিকিট দিতে পারে।
বিশেষ করে ছুটির মৌসুমে বা ট্যুরিজম সিজনে এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে টিকিট দামে প্রতিযোগিতা বাড়ে। সেক্ষেত্রে এই জ্বালানি সাশ্রয় তাদের মূল্য কমানোর সুযোগ তৈরি করতে পারে।
সরকারের মূল্য নির্ধারণ কৌশল (Govt. Fuel Pricing Strategy)
২০২২ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশে মাসিক ফুয়েল মূল্য সমন্বয় পদ্ধতি চালু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে আমদানিকৃত তেলের গড় দাম, ডলার রেট, অপারেশনাল খরচ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে দামের হেরফের খুব দ্রুত দেশের বাজারে প্রতিফলিত হয়। এই পদ্ধতিই জেট ফুয়েলের দাম Tk ১৭.৪৩ কমানোর পথ সুগম করেছে।
টিকিটের দাম কমবে? (Will Ticket Prices Come Down?)
একটি বড় প্রশ্ন হলো, এই জেট ফুয়েল সাশ্রয়ের ফলে এয়ার টিকিটের দাম কি কমবে? উত্তর হলো—এখনই না। কারণ টিকিটের দাম নির্ভর করে অনেক কিছুর উপর, শুধু ফুয়েল নয়। চাহিদা, ফ্লাইটের সংখ্যা, প্রতিযোগিতা, ট্র্যাভেল সিজন—সবকিছু একসাথে বিবেচনায় নিয়ে টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়।
তবে জেট ফুয়েলের দাম যদি পরবর্তী কয়েক মাস স্থিতিশীল বা আরও কম থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে কিছু রুটে সস্তা টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
গাড়ির পেট্রোল বা ডিজেল দাম কি কমবে? (Petrol/Diesel Price Kombe?)
এই সিদ্ধান্ত শুধু জেট ফুয়েলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যারা মোটরসাইকেল, গাড়ি বা বাসে পেট্রোল বা ডিজেল ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এই দামের কোনো প্রভাব পড়বে না। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ভিন্নভাবে নির্ধারিত হয় এবং এর সাথে জেট ফুয়েলের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই।
এয়ারলাইন্সদের প্রতিক্রিয়া (Airlines Er Reaction)
নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা সহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলো ইতিমধ্যে এই দাম কমার বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছে, তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে এবং ভবিষ্যতে যাত্রীদের জন্য কিছু সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখছে।
তবে তারা এটাও বলছে, একা ফুয়েল সাশ্রয়কে ভিত্তি করে টিকিটের দাম কমানো কঠিন—বাজার বিশ্লেষণ এবং আর্থিক পরিকল্পনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
উপসংহার (Conclusion)
জেট ফুয়েলের দাম Tk ১৭.৪৩ কমে যাওয়া এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর। যদিও সাধারণ যাত্রীদের জন্য এটি সরাসরি কোনো পরিবর্তন না আনলেও, ভবিষ্যতে এর প্রভাব পড়তে পারে টিকিটের দামে কিংবা বিভিন্ন অফারে।
সরকারের এই মাসিক মূল্য সমন্বয় পদ্ধতির ফলে দেশের বাজার দ্রুত বৈশ্বিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে পারছে। এই পদ্ধতি ভবিষ্যতেও যাত্রী ও এয়ারলাইন্স উভয়ের জন্য লাভজনক হতে পারে—যদি আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল থাকে।